শিয়রে রবীন্দ্রনাথ

ইচ্ছেটা খুব অদম্য হয়ে উঠছিল ।
ঘুপচি গলি পেরিয়ে অনেকটা পথ
চারপাশে কেবল ইটের দালানকোঠা
কিছু ভাঙা
কিছুবা নতুনের লাইসেন্স পেয়ে
টগবগিয়ে নাম লেখাচ্ছে এপার্টমেন্টের খাতায়
পুরনো দালান গুলোর গা বেয়ে একটা দুটো
বটের উঁকি ঝুঁকি
অশ্বত্থও আছে,
পাখিগুলো বেশ উড়ে উড়ে
কখনো বসছে ওই নরম ডাল গুলোতে।
নেচে নেচে এদিক সেদিক হারাচ্ছে কেমন,
দোয়েল নাকি
ওই একটা পাখি আজকাল হরদম দেখা মেলে
স্কুলের বইয়ে এর নাম তো দোয়েলই পড়েছিলাম
কালো শরীরে ছোপ ছোপ সাদা দাগ।


এই সমস্ত দেখতে দেখতে ইচ্ছেটা যেন আরো বাড়ছে
আমার চোখ দুটো অবাক হবার আগেই
খুব ধীরে গোধূলির রঙে সেজে ফেললো আকাশটা
আজ আকাশের হাতে অনেক রঙ
আচ্ছা?
প্রতিদিনই কি তাই থাকে?
এমনকি সবুজ ও বাদ নেই
স্বচ্ছ নীল আকাশে সবুজাভ আভা ধীরে মিলিয়ে গেছে বেগুনি আলোয়
শরতে কেমন ঝুপ করে রাত্রি নামে
আর একখানা ঘোলাটে চাঁদ হেসে ওঠে
প্রতি মুহূর্তে মনে হয় এই বুঝি
চাঁদটার একপাশ পড়বে গলে
আর সারা আকাশ রুপোর রঙে মাখামাখি হবে।
নানা ভাবে চাঁদের দিকে চাইলাম
কখনো বাঁ পাশ গলা
কখনো মনে হচ্ছে ডান পাশ
আচ্ছা?
ওই ছায়াটা কিসের?
কাঁপছে কেমন অনেকক্ষণ ধরে?
আরো কেউ বৈরাগী বেরিয়েছে নাকি আজ?
আমার মতন?
এই যে,
কে আপনি?
দাঁড়ান ,
একটু দাঁড়ান না।
আপনিও কি আমার মতন?
কাঁপা গলায় বলে ওঠে বৈরাগী, আপনি কার মতন?
আপনার মতন হতেই পারি বটে কিছুটা
নয়তো এমন উছন্নের মতন কেউ রাস্তায় ঘোরে আকাশ দেখতে?
আপনি আকাশ দেখছেন কেন?
জানতে পারি?
হা হা হা অপেক্ষা করছি,
বৃষ্টির জন্যে।
আশ্চর্য ! আমিও তাই।
ধীরে ধীরে ছায়া স্পষ্ট হল
আমি কিছুটা বিভ্রান্ত হলাম
অমন গাল ভরা লম্বা দাঁড়িওয়ালা
আলখাল্লা পরা মানুষ টাকে আমি তো রবি ঠাকুর বলেই চিনি
তবে কি তিনিও?
তাঁর আত্মাও?
ইচ্ছেটা আরো অদম্য হয়ে উঠলো যেন।
কবিতা লেখার জন্য
কিজানি
হয়তো বৃষ্টির জন্য।
তিনিও তো এখানেই নেমে এসেছেন
ওখানে হয়তো বৃষ্টি নেই,
ওখানে হয়তো বৃষ্টি হয়না।
তাই কবিতা লেখা হয়না।
Share on Google Plus

About Zobayer Ahmmed

This is a short description in the author block about the author. You edit it by entering text in the "Biographical Info" field in the user admin panel.
    Blogger Comment

0 comments:

Post a Comment